আড়তে ডিম সরবরাহ শুরু হলেও দাম আসেনি ভোক্তার নাগালে। সরকারি সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। প্রতি ডজনে বাড়তি গুনতে হচ্ছে অন্তত ২০ টাকা। ক্রেতাদের অভিযোগ, এখনো চড়া পাইকারি দাম। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। কিছুদিন ধরে ডিমের বাজারে চলা অস্থিরতার লাগাম টানতে গত মঙ্গলবার দাম বেঁধে দেয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সে অনুযায়ী, গতকাল থেকে খুচরা বাজারে ডিম মেলার কথা প্রতি ডজন ১৪২ টাকায়। কিন্তু সে নির্দেশনা মানছেন না বিক্রেতারা। বরং পাইকারিতেই কিনতে হচ্ছে ১৪৭ টাকায়। কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে আসতে শুরু করেছে ?ডিম। তবে বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। মানা হচ্ছে না উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা সরকার নির্ধারিত দাম। কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা জানান, আড়ত থেকে এখনো পর্যাপ্ত ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। যাও মিলছে, তাও সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ডজন ডিম খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫-১৭০ টাকায়। পাইকারি পর্যায়ে বাড়তি দামে কেনায়, খুচরায়ও বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। বড় বড় কোম্পানিগুলোর কারণেই ডিমের বাজারে এ নৈরাজ্য বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। পাইকারদের দাবি, পিস প্রতি প্রায় দেড় টাকা বেশি দরে কেনার কারণে খুচরাতেও দাম পড়ছে বেশি। অন্যদিকে উৎপাদক পর্যায়ে বড় বড় কোম্পানিগুলোর কারণেই ডিমের বাজারে এই নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। এদিকে ক্রেতারা বলছেন, শুধু দাম বেঁধে দিলে হবে না। সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি হচ্ছে কি না সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি করতে হবে সরকারকে। এর আগে গত দুই দিন রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় ডিমের আড়ত বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। গত রাত থেকে আবার সচল হলে জমে ওঠে তেজগাঁওয়ের আড়ত। ফলে রাজধানীতে ডিমের জোগান স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এদিকে প্রতিটি ১১ টাকায় কিনে ১৫ টাকায় বিক্রি, ট্রেড লাইসেন্স ও ক্রয় রসিদ না থাকায় গতকাল রাজধানীর মিরপুরের এক দোকানিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে ভোক্তা অধিদপ্তর। এ সময় কালকের মধ্যেই নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি নিশ্চিতের আশ্বাস দেয় সংস্থাটি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার মন্ডল বলেন, উনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ১১ টাকা করে তিনি ক্রয় করেছেন। কিন্তু উনি বিক্রি করছেন ১৫ টাকা করে। তিনি প্রতি ডিমে লাভ করছেন ৪ টাকা করে। এটা অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক। এটা সরকারের যৌক্তিক মূল্যের স্পষ্ট ভায়োলেশন। আমি ডিম ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানাব আপনারা আইন মেনে ব্যবসা করুন। এ সময় সেই দোকানির সব ডিম সরকারি দামে বিক্রি করে দেয় ভোক্তা অধিদপ্তর। যা কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ।