দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া হাউস ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল দুপুর সোয়া ২টার দিকে এ তান্ডব চালায় তারা। আকস্মিকভাবে শতাধিক মানুষের একটি মিছিল নিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের ‘নিউজ টোয়েন্টিফোর’ ও ‘টি স্পোর্টস’ টেলিভিশন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালের কণ্ঠ, ডেইলি সান, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ও রেডিও ক্যাপিটালের সামনে জড়ো হয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তাদের হাতে ছিল হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র। তাদের মধ্যে কিছু লোকের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তারা ভবনে ঢোকার আগে নির্বিচারে গাড়ি ভাঙচুর করে ত্রাস ছড়িয়ে দেয়। সন্ত্রাসী কায়দায় তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে এ হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, হামলাকারীরা স্লোগান দিতে দিতে জোরপূর্বক প্রধান ফটক খুলে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া হাউসগুলোর ভিতরে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। প্রথমে তারা রেডিও ক্যাপিটালের ভিতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। সেখানে টেবিল, কম্পিউটার, প্রিন্টার, এসিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম গুঁড়িয়ে দেয়। রেডিও ক্যাপিটালের সবকিছুতে ভাঙচুর চালানোর পর বাইরে এসে মিডিয়া প্রাঙ্গণে রাখা ২০-২৫টি গাড়িতে ভাঙচুর চালায় তারা। এ ছাড়া ভবনের কাচের দেয়াল ও দরজা ভেঙে ফেলা হয়। এরপর দুর্বৃত্তরা দৈনিক কালের কণ্ঠের ভিতরে ঢুকেও ভাঙচুর চালায়। তাদের এ সন্ত্রাসী হামলায় গোটা মিডিয়া হাউসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে কেউ হতাহত না হলেও ভবন ও মিডিয়া প্রাঙ্গণে থাকা সরঞ্জাম ও গাড়িগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পাশাপাশি তিনটি ভবনে কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর, নিউজ টোয়েন্টিফোর ও টি স্পোর্টস টেলিভিশন ও ক্যাপিটাল এফএম রেডিও অবস্থিত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্বৃত্তরা সারিবদ্ধভাবে ভিতরে ঢোকে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সি লোকজন ছিল। তাদের কারও কারও মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। বেশির ভাগ দুর্বৃত্তের হাতে লাঠি ছিল। অনেকেই লুঙ্গি পরা ছিল। এদের মধ্যে দুজন লাঠি দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। তাদের সন্ত্রাসী রূপ ধারণ করে নানা অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। এদিকে এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকেও খোঁজ নেওয়া হয়। র্যাব সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান বলেন, হামলাকারীদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।
পরিদর্শনে শিক্ষার্থীরা, গণমাধ্যমের ওপর হামলা রুখে দেওয়ার ঘোষণা : ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে হামলার ঘটনা পরিদর্শনে এসে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, তারা গণমাধ্যমের ওপর যে কোনো হামলা রুখে দেবেন। হামলার পর বিকালে মিডিয়ায় এসে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, গণমাধ্যমের ওপর যে হামলা হচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীরা জড়িত নন। এ হামলাগুলো কিছু দুষ্কৃতকারী নিজেদের স্বার্থরক্ষায় করে আসছে। গণমাধ্যমের ওপর হামলা রুখে দিতে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুত।
ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে হামলা ঘটনার পর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শতাধিক শিক্ষার্থী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বিপ্লবের পরই একটা প্রতিবিপ্লব হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এখন যেহেতু শিক্ষার্থীরা এ স্বাধীনতা অর্জন করেছেন, সেহেতু কিছু লোক তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এসব কাজ করে যাচ্ছে। তারা শিক্ষার্থীদের নামটা বারবার ব্যবহার করে যাচ্ছে। এটা আমরা বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাচ্ছি। আজও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে দেখতে পেলাম। তারা শিক্ষার্থীদের নাম করে যে ভাঙচুর করেছে সেটা ন্যক্কারজনক। এ ধরনের কাজ সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনোই প্রমোট করেন না।
তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেক ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। কিন্তু পরে প্রমাণ হয়েছে, একটি ধ্বংসযজ্ঞও শিক্ষার্থীদের দ্বারা হয়নি। সুতরাং এ ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই যুক্ত নন। আমরা গণমাধ্যমের নিরাপত্তার জন্য আলাদাভাবে কাজ করছি। আমাদের একটি টিম রয়েছে। আমরা এ টিমকে আরও বড় করব। গণমাধ্যমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা তা করব।
তারা আরও বলেন, এখানে বিভিন্ন জায়গায় হামলা করা হয়েছে, গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুরো তান্ডব চালানো হয়েছে। এটা কোনো শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারে বলে আমরা মনে করি না। স্বাধীন হওয়ার পর থেকে একটি কুচক্রী মহল তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য এ ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে আশা করব, তারা যেন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান রাখব, তারা যেন ছাত্রদের সঙ্গে সংহতি রেখে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করে।
পরিদর্শনে এসে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সমন্বয়ক তরী বলেন, যারা এখানে হামলা করেছে তারা কেউ শিক্ষার্থী নয়। আমরা সবাই আন্দোলন করেছি। আমরা কখনোই চাই না আমাদের দেশের ক্ষতি হোক, আমাদের মানুষের ক্ষতি হোক। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি। মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম। সেই গণমাধ্যমের ওপর হামলার আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা অন্য গণমাধ্যমকর্মীদের বলতে চাই, যদি কেউ শিক্ষার্থীদের পরিচয়ে হামলা করে আপনারা তাদের ধরে আইনের হাতে তুলে দিন। আমরা আমাদের জায়গা থেকে গণমাধ্যমকে সহযোগিতা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আমরা গণমাধ্যমকর্মীদের পাশে আছি। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সহযোগিতায় এ দুর্বৃত্তদের রুখে দেব।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সমন্বয়ক হাসিবুল হোসেন শান্ত বলেন, যারা এখনো হামলা ও তান্ডবের চেষ্টা করছে তারা দুর্বৃত্ত। আমরা মনে করি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৃষ্ট যে বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশে এ হামলাকারীরা স্বৈরাচারের দোসর। আমরা এ বিষয় সমন্বয়কদের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমরা যত দ্রুত সম্ভব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে এদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব। আমাদের স্পষ্ট বার্তা-আমাদের নতুন বাংলাদেশে এখন আর কোনো দুষ্কৃতকারীর স্থান হবে না। সাধারণ শিক্ষার্থী যারা আছেন, সবার প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে কোথাও যদি দুষ্কৃতকারী দেখেন তবে তাদের বেঁধে ফেলে আইনের হাতে তুলে দিন। তিনি আরও বলেন, এদের হামলার উদ্দেশ্য চারদিকে আতঙ্ক ছড়ানো, আমাদের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ করা, আমাদের রাষ্ট্রীয় সংস্কারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো। এরা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে। এরা রাজাকারের দোসর। আমরা এখন থেকে সতর্ক অবস্থানে রয়েছি, তারা যেন আর এ ধরনের নৈরাজ্য চালাতে না পারে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম বলেন, কিছু দুষ্কৃতকারী শিক্ষার্থীর পরিচয় দিয়ে এ ধরনের হামলা করেছে। তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ছাত্রসমাজের আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ এবং ছাত্রসমাজের অর্জন বেহাত করার জন্য দুষ্কৃতকারীরা কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রকে সংস্কার করার আগ পর্যন্ত আমাদের এ সংগ্রাম চলবে। এ সংগ্রাম প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য যদি কেউ চেষ্টা করে তাহলে আমরা তার কালো হাত ভেঙে দেব।
উদ্বিগ্ন ‘গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগ’ : ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোর ও টি স্পোর্টস, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালের কণ্ঠ, ডেইলি সানসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে ‘গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগ’। একই সঙ্গে অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায় তারা। অন্যদিকে মালিকানার দ্বন্দ্বে বেসরকারি সময় টেলিভিশন বন্ধের ঝুঁকিতে পড়েছে। এ ঘটনায় টেলিভিশনটিতে কর্মরত সাধারণ গণমাধ্যমকর্মীরা যাতে পেশাগত ঝুঁকি বা চাকরি হারানোর অনিশ্চয়তায় না পড়েন তার নিশ্চয়তা দানে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি ডিআরইউর : ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের গণমাধ্যম কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলানিউজ, ডেইলি সান, রেডিও ক্যাপিটাল ও নিউজ টোয়েন্টিফোর অফিসে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ। পাশাপাশি এ হামলায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
গতকাল এক বিবৃতিতে ডিআরইউ সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ ও সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন বলেন, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন। এ ধরনের হামলা সাংবাদিকসমাজকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো লেখা বা প্রতিবেদনে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিবাদ জানানোর প্রচলিত পদ্ধতি রয়েছে, এখানে পেশিশক্তি দেখানোর সুযোগ নেই। গণমাধ্যম কারও প্রতিপক্ষ নয়, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করাই গণমাধ্যমের কাজ। হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা অনভিপ্রেত। এর আগেও বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে। আগামীতে যেন এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা না ঘটে এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। বিবৃতিতে অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানোর পাশাপাশি ওই সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও সর্বস্তরের শ্রমিক-কর্মচারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নিন্দা : বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া হাউস ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ পিএলসিতে দুর্বৃত্তদের হামলা ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ নির্বাহী কমিটি এ ঘটনার নিন্দা এবং দ্রুত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির উদ্বেগ ও নিন্দা : ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ পিএলসিতে দুর্বৃত্ত দলের হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ)। এক বিবৃতির মাধ্যমে রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যম কার্যালয়ে এমন হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিআরইউ নেতৃবৃন্দ বলেন, গণমাধ্যম কার্যালয়ে এমন হামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি। অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের শনাক্ত করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
খুলনা বিএনপি ও জামায়াতের নিন্দা : ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, খুলনা মহানগর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, এ হামলাকারীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি ও নিন্দা জানাচ্ছি।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, গণমাধ্যম কার্যালয়ে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বিএনপি কখনই সমর্থন করে না। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম বলেন, আমরা যে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজের নিন্দা জানাই। দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা ও এসব কাজে যারা জড়িত তাদের এ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ ছাড়া নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি ও বিশিষ্ট কলামিস্ট মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানসহ অনেকে।
গণমাধ্যমে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে- রাশেদা কে চৌধুরী : সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছাত্রছাত্রীরা কোনো গণমাধ্যমের ওপর হামলা করছে না। কারা এই হামলা চালাচ্ছে তা খুঁজে বের করতে হবে। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া লিমিটেডে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন তিনি।
গণসাক্ষরতা কেন্দ্রের এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, এই অপকর্মে জড়িতদের আটক করা না গেলে সারা দেশে একটা ভুল মেসেজ যেতে পারে। অনেকে মনে করে থাকতে পারেন যে, আন্দোলনকারী ছাত্ররা এর সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এর সঙ্গে তো ছাত্ররা জড়িত নয়।
রাশেদা কে চৌধুরী আরও বলেন, একদিকে আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলছি, অন্যদিকে গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালানো হবে- তা মেনে নেওয়া যায় না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একটি পক্ষ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। এটি চলতে দেওয়া যায় না। এই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।