রাশিয়া এখনও সাম্রাজ্যের মতো আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল। বুধবার (১০ জুলাই) ওয়াশিংটনে ন্যাটো সম্মেলনের পাশে ইইউ ডিফেন্স নাইট ইভেন্টে বক্তৃতার সময় তিনি একথা বলেন।
এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সাম্রাজ্য পুনর্গঠন করতে চান বলেও মন্তব্য করেছেন বোরেল। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক জোট ন্যাটো, এর অংশীদার দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৩২ সদস্যের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের বৈঠকের জন্য জোসেপ বোরেল এখন ওয়াশিংটনে রয়েছেন।
৯-১১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোটের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বছর জোটটি তার প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী পালন করছে।
বোরেল বলেন, ‘রাশিয়া এখনও একটি সাম্রাজ্য হিসাবে আচরণ করছে এবং (রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির) পুতিন সেই সাম্রাজ্যের পুনর্গঠন করতে চান। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন রুশ বাহিনী কিয়েভে বোমা হামলা শুরু করে, তখন আমরা নিজেদেরকে এই বিষাদময় বাস্তবতার মধ্যে খুঁজে পাই। এবং এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য আমরা নিজেদেরকে খুব খারাপভাবে প্রস্তুত করেছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। হ্যাঁ, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ৭৫ বছর আগে ইউরোপে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং আমরা ঐক্য ও শক্তির সাথে তখন সাড়া দিয়েছিলাম। এবং আজ একমাত্র যে জিনিসটি আমরা করতে পারি তা হলো- সেই একই পথ অনুসরণ করা।’
গত তিন বছরে ইউরোপে মোট প্রতিরক্ষা ব্যয় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে বোরেল বলেছেন, ‘এটি একটি কৌশলগত দায়িত্বের বিষয় এবং আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হওয়ার জন্য আমাদের সেনাবাহিনীর, আমাদের প্রতিরক্ষার সক্ষমতা উন্নত করতে হবে।’
ইউরোপের আঞ্চলিক প্রতিরক্ষার জন্য ন্যাটোর বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ন্যাটোকে শক্তিশালী করতে এবং (একে-অন্যের) বোঝা ভাগ করে নিতে হবে। বোরেল জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রাদুর্ভাবের পর প্রতিরক্ষা বিনিয়োগ বাড়ানোকে আরও গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে ইইউ।
তার ভাষায়, ‘যদি আমরা ইউক্রেনকে দ্বিতীয় বেলারুশে পরিণত করতে এবং কিয়েভে ‘পুতুল সরকার’ স্থাপন করতে পুতিনের রাশিয়াকে সুযোগ দিই, তাহলে আমরা পরবর্তীতে অনেক বেশি মূল্য দিতে পারি। ইউক্রেনকে তার অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকতে হবে। (এটি) আমাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয়।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে একটি ইইউ ইনোভেশন অফিস খুলবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।