অনেকটা ফ্রি-ই তে পাচ্ছেন বাসা অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হিটিং কুলিং সিস্টেম। মূলধারার স্বনাম ধন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গ্রি মেকানিক্যাল ইয়াংকার্সের প্রেসিডেন্ট তোফায়েল চৌধুরি লিটন এমনটা জানালেন। সরকারি সহযোগিতা নিয়ে নিউইয়র্ক সিটির ৫টি বরো, লং আইল্যান্ড, নিউজার্সি ও কানেকটিকার বাসিন্দারা পাবেন এ সুবিধা। তিনি জানান , যদি আপনার বাসার নতুন হিটিং সিস্টেম বসাতে ১০ হাজার ডলারের মতো খরচ পড়ে , আপনার আয় অনুপাতে ৮ হাজারের ডলারের মতো সরকারি অনুদান পাবেন। আর সেই সাথে পাবেন আরো দুই হাজার ডলারের ট্যাক্স রিবেট। তবে এই সংখ্যাটা একটু কম বেশি হতে পারে। আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই সুবিধার কথাটা হয়তো অনেকে জানেন না। পরিবেশসম্মত হিটিং ও কুলিং সিস্টেম (এয়ারকন্ডিশন্ড) জন্য সরকার এ সহায়তা দিচ্ছে। এখনো অনেকের বাসায় পুরানো ওয়েল হিটিং সিস্টেম রয়েই গেছে যা পরিবেশ দূষণ তৈরি করে।
তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিজ বাসায়, এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অত্যাধুনিক ও পরিবেশসম্মত হিটিং ও কুলিং সিস্টেম (এয়ার কন্ডিশন্ড) লাগিয়ে নিতে পারেন। মুক্তি পেতে পারেন বয়লার সিস্টেম থেকে এবং সাশ্রয় করতে পারেন অতিরিক্ত বিল দেওয়া থেকেও।
রিবেটের পর যদি অতিরিক্ত অর্থ লাগে সেই অর্থ বাড়ির মালিক বা ব্যবসার মালিককে ব্যয় করতে হবে। এই অতিরিক্ত অর্থ ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ইন্টারেস্টে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ১৫ বছরের মধ্যে এই অর্থ পরিশোধ করা যাচ্ছে। যে কেউ এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন, জানান তোফায়েল চৌধুরি লিটন।
এদিকে এয়ারকন্ডিশন্ড ছাড়াও অত্যাধুনিক ডিজিটাল ওয়াটার হিট পাম্প এবং হিট পাম্প উইন্ডো প্যাকেজ ইউনিট সুলভে দিচ্ছে গ্রি মেকানিক্যাল ইয়াংকার্স। একটি ওয়াটার হিট পাম্প-এর বাজার মূল্য প্রায় ২২০০ ডলার। এক্ষেত্রে গ্রি মেকানিক্যাল ইয়াংকার্স দিচ্ছে মাত্র ৫০০ ডলারে। একইভাবে হিট পাম্প উইন্ডো প্যাকেজ ইউনিট মিলছে সাশ্রয়ী মূল্যে। হিট পাম্প উইন্ডো প্যাকেজ ইউনিটের বিশেষ সুবিধা হলো এটি অ্যাপার্টমেন্ট বাসার জন্য অধিক কার্যকর। একসঙ্গে গরম ও ঠান্ডা বাতাস দেয় এই ইউনিটটি। দামেও সাশ্রয়ী।
তোফায়েল চৌধুরি লিটন বলেন, এই অর্থ বিলের চেয়েও কম হবে। যে কারণে তাড়াতাড়ি এই সুযোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এই সিস্টেম লাগানোর আগে তোফায়েল চৌধুরি লিটন সবকিছুই হিসাব করে দেখিয়ে দেবেন।
প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিকে সহযোগিতা বা সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে তোফায়েল চৌধুরি লিটন প্রায় চার বছর আগে নিউইয়র্কের ইয়াংকার্সে এই প্রতিষ্ঠান চালু করেন। তার অফিস বা প্রতিষ্ঠান ইয়াংকার্সে হলেও তিনি নিউইয়র্কের সর্বত্র এই কাজ করেন। রয়েছে লংআইল্যান্ড এবং ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টিতে অফিস। বলা চলে অনেকটা বিনা অর্থে এই সিস্টেম লাগিয়ে দিচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে দিচ্ছেন ১০ বছরের গ্যারান্টি-ওয়্যারেন্টি। আরো রয়েছে বিক্রয়োত্তর সেবা।
বৃহত্তর সিলেটের কৃতি সন্তান ও সফল ব্যবসায়ী তোফায়েল চৌধুরি লিটন জানান, এটি মূলত নিউইয়র্ক সিটির প্রজেক্ট। নিউইয়র্ক সিটিতে গ্রিন সিটি করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই প্রজেক্ট চালু করা হয়। অন্য কমিউনিটির লোকজন এই সুযোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু বাংলাদেশিদের সেবা দেওয়ার জন্য আমি এই প্রজেক্ট চালু করি। তিনি বলেন, এই সিস্টেম চালুর জন্য প্রয়োজন শুধু একজন বাড়ির মালিক বা ব্যবসায়ীর সিদ্ধান্ত নেওয়া। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমরাই নিজেদের লোক দিয়ে সবকিছু বাস্তবায়ন করবো এবং সিটির অর্থায়নের ব্যবস্থাও আমরা করবো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এই সিস্টেমটি হচ্ছে পরিবেশসম্মত। কারণ এই সিস্টেম বাসায় বা ব্যবসায় লাগালে সেই বাসায় আর তেল বা গ্যাসের বয়লার থাকবে না। যার ফলে পরিবেশ থাকবে স্বাস্থ্যসম্মত।
ব্যবসায়ী তোফায়েল চৌধুরি লিটন বলেন, এই অর্থ পেতে হলে কোনো ইনকাম চেক করা হয় না। সব ব্যবস্থা আমরাই করবো। তিনি বলেন, কারো বাসায় সিস্টেম চালু করা হলে আমরাই আমাদের অর্থে ফলোআপ করবো। সিস্টেম লাগানোর পর থেকেই আমাদের সার্ভিস শুরু হবে। সিস্টেম লাগিয়ে দিয়ে আসর পর অনেকেই হয়ত মনে করবেন যে, আমাদের দায়িত্ব শেষ। আসলে তা কিন্তু নয়। কম করে হলেও আমাদের সার্ভিস ১০ বছর চালু থাকবে এবং ১০ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, এই সিস্টেম বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে করা হবে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের মেশিন বিদ্যুৎ জেনারেট করবে। অন্যদিকে বাড়ির বা ব্যবসার মালিক বয়লারের গ্যাস বা তেলের বিল থেকে মুক্তি পাবেন। সে ক্ষেত্রে বিল আসতে পারে রান্নার মতই। এই সিস্টেমে আরো যে-সব সুযোগ রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রতিটি ফ্লোরের জন্য আলাদা আলাদা সিস্টেম করে দেওয়া। সেই সঙ্গে রুমও। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, আমাদের বাসায় এখন যে হিটিং সিস্টেম তাতে করে সমস্ত বাড়ির হিটিং চলে। নতুন সিস্টেমে আপনি যে রুমে থাকবেন বা প্রয়োজন মনে করবেন সেই রুমেই হিট চলবে। অর্থাৎ আপনি আপনার সুবিধামতো হিট চালাতে পারবেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সিস্টেমের ওয়্যারেন্টি এক বছরের। এক বছরের মধ্যে কিছু হলে আমরা নতুন করে সিস্টেম লাগিয়ে দেবো। তিন বছরের মধ্যে কোনো পার্টস নষ্ট হলে তা লাগিয়ে দেবো এবং ১০ বছরের মধ্যে কমপ্রেসার নষ্ট হলে তাও লাগিয়ে দেবো।
তিনি বলেন, এই সুযোগ প্রতিটি বাঙালি বাড়ির মালিক এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক গ্রহণ করতে পারেন। এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। এই সুযোগ প্রত্যেকের গ্রহণ করা উচিত। কারণ সিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামীতে কোনো বাড়িতে বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বয়লার সিস্টেম থাকবে না। যে কারণে সময় উপযোগী সুযোগটি সবার গ্রহণ করা উচিত। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত আমরা মূল ধারার সংগে ব্যবসা করে আসছি। এর পাশাপাশি আমরা বাংলাদেশের কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করে কমিউনিটির সেবায় অংশ গ্রহন করতে চাই এমনটা জানালেন এই ব্যবসায়ী।