অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে গণঅধিকার পরিষদের বৈঠকে জাতীয় সংসদের মেয়াদ ৪ বছর করার প্রস্তাবসহ ১২ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে দলটি। শনিবার রাত ৮টা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টাগণের সাথে গণঅধিকার পরিষদের বৈঠক হয়। বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে এই ১২টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফাতেমা তাসনিম ও অ্যাডভোকেট নূরে এরশাদ সিদ্দিকী। বৈঠকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টাদের সাথে গণঅধিকার পরিষদের দ্বিতীয় দফা আলোচনায় চলমান পরিস্থিতিতে নিম্নোক্ত প্রস্তাবগুলো দেয়া হয়েছে।
১. অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের পরিকল্পনা ও রোডম্যাপ প্রকাশ করা।
২. যেহেতু সংবিধান ও রাষ্ট্র সংস্কার অভ্যুত্থানের একটি মৌলিক ধারণা ও এ সময়ের অপরিহার্য বিষয় হয়ে উঠেছে। তাই গণহত্যায় জড়িত পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের বিচার এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৩. সরকারের কাজের সাথে রাজনৈতিক দল ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে আলোচনার মাধ্যমে দক্ষ, কর্মঠ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের পরিসর বাড়ানো।
৪. শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আমলে দুর্নীতি, লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া মাফিয়া, অর্থপাচারকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং গত ১৫ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
৫. সরকারি বিভিন্ন দফতরে গত ১৫ বছরে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত দলবাজ, দুর্নীতিবাজদের অপসারণের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া এবং সরকারি-আধা সরকারি চাকরিতে মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে নিয়োগের সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি ও নিয়োগ কমিশন গঠন করে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সকল নিয়োগ প্রদান।
৬. রদবদলের নামে ডিসি এসপিসহ পুলিশ ও প্রশাসনে আ’লীগকে পুনর্বাসনকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ।
৭. যুগের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মমুখী ও গবেষণা নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার প্রণয়নে নতুন শিক্ষা কমিশন গঠন।
৮. দুদক পুর্নগঠন করে উপযুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে শক্তিশালী দুর্নীতি দমন কমিশন করা।
৯. যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধাসহ ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে গার্মেন্টস ও পণ্য রফতানির সুযোগের সৃষ্টিরসহ নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান করে ‘জি টু জি’ পদ্ধতিতে বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠানো।
১০. সিটিজেন চার্টার করে দ্রুত সময়ে সকল ধরনের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা।
১১. দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও সংসদের মেয়াদ ৪ বছর করা।
১২. যেসব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই সেখানে দূতাবাস সেবা প্রদান ও আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।