বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকের অসন্তোষের জেরে আজও বন্ধ রয়েছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার অন্তত ৪০টি কারখানা। শ্রমিক ও মালিকপক্ষের আলোচনায় কোনো সমাধানে না পৌঁছানোয় এসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১০টি কারখানায় শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বেশ কয়েকটি কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান, র্যাব, পুলিশের রায়ট কার। এসময় কারখানাগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে। দুপুর পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানায়, সকালে শ্রমিকরা নির্ধারিত সময়ে কারখানায় উপস্থিত হয়। কিন্তু পরে কিছু কারখানায় কাজ বন্ধ করে বসে থাকায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। আশপাশের কারখানায় ছুটি দেওয়ার পর নিরাপত্তার স্বার্থে আরও কিছু কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। তবে শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
জনরন সোয়েটার কারখানার এইচআর এ্যাডমিন এন্ড কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, বিজিএমইএ এর নির্দেশনা মেনে আমরা কারখানা পরিচালনা করছি। এরমধ্যে হঠাৎ করে বহিরাগত কিছু লোকজন কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের লিঙ্কিং এবং ট্রিমিং শাখা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে অন্যান্য শাখায় কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে কারখানায় হামলা, ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। তারা যদি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং শ্রমিকরা সচেতন হয় তাহলেই কারখানা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা সম্ভব। অন্যথায় এই শিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে। এছাড়া সময়মতো পোশাক উৎপাদন এবং রপ্তানি করতে না পারলে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা কষ্টকর হয়ে যাবে।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, বেশকিছু দিন ধরেই বিভিন্ন দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছে শ্রমিকরা। আমরা তাদের সাথে মালিকপক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করছি। কিছু কারখানায় আবার নতুন করে দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করায় মঙ্গলবারও ৪০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আরও ১০টি কারখানায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। তবে অন্যান্য কারখানায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে।
এছাড়া যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শিল্প পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের রায়ট কার প্রস্তুত রয়েছে।