দুর্নীতি, অনিয়ম এবং স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, দপ্তরের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারসহ নানা অভিযোগে বেনাপোল স্থলবন্দরের দুই উপ-পরিচালককে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বন্দরের একটি সূত্র জানায়, ভারতীয় আমদানিকৃত পণ্য বেনাপোল স্থলবন্দরের ওজনে ডিজিটাল কারসাজি করে আর্থিকভাবে লাভবান এবং কোটি কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকিতে সহায়তা করায় বন্দরের সাবেক উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মনিরুল ইসলাম এবং উপ-পরিচালক মো. কবির খানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, মো. মনিরুল ইসলাম ২০২২ সালের ১ অক্টোবর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে যোগ দেন। সেই সময় থেকেই তিনি ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানিকৃত বিভিন্ন ধরনের পচনশীল পণ্য ওজনে ডিজিটাল কারচুপি শুরু করেন। ভারত থেকে সে সময়ে প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক পচনশীল পণ্য মাছ, ফল, কাঁচা মরিচ, পিঁয়াজ, টমেটো, আলু ইত্যাদি বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতো।
কাস্টমসের কতিপয় কর্মকর্তা ও কতিপয় অসাধু সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীর যোগসাজশে ওজন স্কেলের সফটওয়্যারের আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে প্রতি ট্রাকে প্রতিদিন দুই থেকে তিন টন পণ্যের ওজন কম দেখানো হতো।
প্রতি টন পণ্যের শুল্কায়ন ৮০ থেকে এক লাখ টাকা। সেই হিসেবে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিত ওই চক্রটি। ফাঁকি দেওয়া সেই রাজস্ব তিনটি জায়গায় আনুপাতিক হারে বণ্টন হতো। কাস্টমসের একজন কর্মকর্তার নাম বেনাপোলে ভেসে বেড়ালেও তিনি নিরাপদে পার পেয়ে যান। জনশ্রুতি আছে চক্রটি প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
সূত্র জানায়, মো. মনিরুল ইসলাম বেনাপোল থেকে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া টাকার একটি অংশ পৌঁছে দিতেন উপ-পরিচালক কবির খানের কাছে। তাদের যোগসাজশে এই চক্র ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। কিন্তু তাদের সেই অপকর্ম প্রকাশ হয়ে পড়লে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয় সংশ্লিষ্ট দফতর এবং এ ব্যাপারে দুদক যশোর তদন্ত শুরু করেছে এবং ইতিমধ্যে ওজন স্কেলে ব্যবহৃত কম্পিউটারের হার্ডডিক্স জব্দ করে তাদের হেফাজতে নিয়েছে।