প্রস্তাবিত বিচারবিভাগীয় সংস্কারের প্রতিবাদে মেক্সিকোতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। এই সংস্কারের ফলে বিচারকদেরও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে।
সমালোচকদের মতে, এই ব্যবস্থা চালু হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সঙ্গে সমঝোতা করা হতে পারে। এর ফলে আমেরিকার সঙ্গে মেক্সিকোর সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ ধাক্কা খেয়েছে।
বিচার বিভাগের এই সংস্কার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডোর প্রস্তাব করেছিলেন এবং পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যিনি হবেন সেই ক্লাউদিয়া শেইনবামও তা সমর্থন করেছেন।
বর্তমানে বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের ফেডারেল জুডিশিয়াল কাউন্সিল নিয়োগ করে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের প্রেসিডেন্ট মনোনীত করেন এবং সিনেট তা অনুমোদন করে। কিন্তু যদি এই সংস্কার চালু হয় তাহলে সাত হাজার বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেট মানুষের ভোটে নির্বাচিত হবেন। কারা প্রার্থী হবেন সেই প্রস্তাব সরকারি প্রশাসন, আইনসভা ও বিচারবিভাগ করবে।
প্রস্তাবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির সংখ্যা ১১ থেকে কমিয়ে ৯ করা হয়েছে। তাদের কাজের মেয়াদও ১৫ বছর থেকে কমিয়ে ১২ বছর করা হয়েছে। এছাড়া বিচারকদের তত্ত্বাবধানের জন্য নতুন সংস্থা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে।
ই সংস্কারের পক্ষে যারা আছেন, তাদের মত হলো- মেক্সিকোতে উচ্চ পর্যায়ের সহিংস অপরাধ থেকে মুক্তি পেতে গেলে এই সংস্কার জরুরি। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বর্তমানে বিচারবিভাগ মানুষকে পরিষেবা দিতে পারছে না। তারা সংগঠিত অপরাধীদের স্বার্থ দেখছে।
কিন্তু বিরোধীদের দাবি, এই ব্যবস্থা চালু করলে পুরো বিচার বিভাগের রাজনীতিকরণ হবে। বিচারবিভাগীয় কর্মীদের ইউনিয়ন বলেছে, এর ফলে শ্রম অধিকার সঙ্কুচিত হবে। তাদের মতে, বিচারকরা নির্বাচিত হলে, তারা বিশেষ স্বার্থ দেখবেন। অপরাধী গোষ্ঠীগুলো বিচারকদের কুক্ষিগত করে ফেলবে।
এর বিরোধিতা করে বিচারবিভাগীয় কর্মীরা ধর্মঘটে নেমেছেন।
এদিকে এর ফলে আমেরিকা ও কানাডার সঙ্গে মেক্সিকোর সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও ক্ষুব্ধ।
মেক্সিকোর মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেন সালাজার বলেছেন, এর ফলে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে মেক্সিকোর বাণিজ্যিক সম্পর্ক খারাপ হবে। কারণ, বিনিয়োগকারীদের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে আস্থা থাকাটা জরুরি।
এর প্রতিক্রিয়ায় মেক্সিকো সরকার বলেছে, আমেরিকা ও কানাডা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। তারা এই দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাময়িক বিরতি চায়।
মেক্সিকোর পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।