শাহরিয়ার রাজ :
মৌসুম শেষ, বৃষ্টি ও কোটাবিরোধী আন্দোলন— এমন বেশকিছু অজুহাতে রাজধানীতে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বাজারে করলা-বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর বেগুন, কচুর মুখি ও কাঁকরোলের কেজি সেঞ্চুরিতে গিয়ে ঠেকেছে। সবমিলিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বৃষ্টির কারণে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলেও সবজির বাজার আজ বেশ গরম।
আজ বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। এ ছাড়া, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ঝিঁঙে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৭০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ১০০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা ও কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মহাখালী বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে আবহাওয়া আজ ঠান্ডা। তবে বাজার করতে এসে দেখলাম সবজির বাজার অনেক গরম। এমন কোনো সবজি নেই যার দাম বাড়তি নয়, এত দাম হলে সাধারণ মানুষ কীভাবে কিনে খাবে?
তিনি বলেন, মাছ মাংসের কথা তো বাদই দিলাম, এত দাম দিয়ে সবজি কেনাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। করলা-বরবটির দাম ১৪০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, বেগুন-কাঁকরোল ১০০ টাকা। এই যদি হয় সবজির দাম, তাহলে কি সাধারণ ক্রেতা সবজি কিনে খেতে পারে?
মালিবাগ এলাকার সবজি বাজারের আরেক ক্রেতা মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, যেখানে এক কেজি সবজি কিনতাম, আজ বাজারে বাড়তি দামের কারণে আধা কেজি করে সবজি কিনলাম। সব ধরনের সবজির দাম অতিরিক্ত বেশি। এত দাম দিয়ে সাধারণ মানুষের সবজি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। প্রতিদিনই সবজির দাম বাড়ছে, কিন্তু এর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। কেউ কি বাজার মনিটরিং করে না? হুটহাট এভাবে দাম বেড়ে যায়, যা কমার কোনও নামই থাকে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করা যাদের কাজ, তারা আসলে কী করে?
বাড্ডা এলাকার সবজি বিক্রেতা মোবারক হোসেন বলেন, আজ কারওয়ান বাজার থেকে বেশি দাম দিয়ে সব সবজি কিনতে হয়েছে। কয়েক দিন ধরে পাইকারি বাজারে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে। এরপর পরিবহন খরচ, রাস্তা খরচ ও দোকান খরচ সবমিলিয়ে আমাদের খরচটা আরও বেশি পড়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারে এসে পড়ছে। আজকে বাজারে সবচেয়ে বেশি দাম টমেটোর। এরপর বরবটি, করলা, বেগুন, কচুর লতি ও গাজরের দাম বেশি যাচ্ছে।
সবজির বাড়তি দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, এখন বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। যে কারণে বাজারে সরবরাহ কম। নতুন সবজি ওঠার আগ পর্যন্ত এসবের দাম বাড়তি থাকবে। এছাড়া, টানা কিছুদিনের বৃষ্টিতে সবজির গাছের ক্ষতি হয়েছে, ফলে বাজারে সরবরাহ কমেছে। আরেকটি দিক হলো কয়েকদিন ধরে টানা ছাত্র আন্দোলনের কারণে যানচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে, ফলে সবজি পরিবহনেও প্রভাব পড়েছে। সবমিলিয়ে বর্তমানে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে।
মাছের দামও চড়া
সবজির পাশাপাশি বাজারের সব ধরনের মাছের দাম চড়া। বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, কাতল প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা ও শিং প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।