চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান উৎসবের মাধ্যমে মিলনমেলা হয়ে গেল লন্ডনে। প্রবাসে সাদা ভাত, গরুর মাংস ও ডালের এই ভোজ আয়োজন যে কতটা উৎসবমুখর হয়ে উঠতে পারে তারও প্রমাণ মিলল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান আয়োজনে।
গত ৭ জুলাই পূর্ব লন্ডনের মেফেয়ার হলে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে মেজবানি খাবারের পাশাপাশি ছিল মন মাতানো সাংস্কৃতিক আয়োজন।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর প্রতিনিধিত্বকারী ও বাংলাদেশিদের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন ‘গ্রেটার চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন ইউকে’ (জিসিএ) এর আয়োজন করে।
সংগঠনটি এবার পঞ্চমবারের মতো বিশাল এই আয়োজন করে। বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অনেক কিছুই ঠাঁই করে নিয়েছে সুদূর যুক্তরাজ্যে।
পিঠা উৎসব, বৈশাখি মেলা কিংবা বাঙালির বিয়ের মতো জমজমাট আয়োজন এখন নিয়মিত দেখা যায় সেখানে। তিন হাজার মানুষ অংশ নেন এবারের মেজবান আয়োজন।
এ দিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এই মিলন মেলা। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সংগঠনের বর্তমান কার্যকরী কমিটির প্রেসিডেন্ট আখতারুল আলম এবং সেক্রেটারি ওসমান মাহমুদ ফয়সাল।
আয়োজনটি চট্টগ্রামবাসীর হলেও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অন্য অঞ্চলের বাংলাদেশিরাও এতে অংশ নেয়। লন্ডনের আশপাশের শহরসহ স্কটল্যান্ড, ম্যানচেস্টার, বার্মিংহামের মতো দূরের শহরগুলো থেকেও চট্টগ্রামবাসী অনেকে ছুটে আসেন ঐতিহ্যবাহী এ আয়োজনে যোগ দিতে।
আয়োজকরা বলেন, এবারের মেজবান আয়োজনে কয়েক হাজার লোকের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
দিনব্যাপী মেজবানি খাবারের পাশাপাশি চলে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক গান, নাচ ও নানা ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন, হিমাংশু গোস্বামী, পাঞ্জাবিওয়ালা খ্যাত শিরিন জাওয়াত, আতিক হাসান, লাবণী বড়ুয়া, এম এ মোস্তফা, তাহমিনা শিপু, আই অন বাংলা স্কুল, পার্পল নাইট ব্যান্ডের জাওয়াদ, রুবেল, জয় ও নাবিলসহ স্থানীয় শিল্পীরা। কৌতুক পরিবেশন করেন মিরাক্কেল কমেডিয়ান আরমন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী বলেন, মেজবানের খাবার বিশ্বের সেরা খাবার। তিনি চট্টগ্রামের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেন, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চট্টগ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্যই এই মেজবানের আয়োজন। চট্টগ্রামবাসীসহ অন্যান্য জেলার লোকদের মধ্যে এবারের মেজবান আয়োজন যে সাড়া ফেলেছে, তাতে ভিড় সামলাতে হয়তো ভবিষ্যতে খোলা কোনো মাঠে আয়োজন করতে হবে।
এতে বক্তব্য রাখেন সাবেক হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী, চ্যারিটি ফান্ড রেইজার দবিরুল ইসলাম চৌধুরী, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ট্রাস্ট্রি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন, চ্যানেল এস’র ফাউন্ডার মাহি জলিল, বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষে ইসমাঈল হোসেন, সাবেক সভাপতি ইসহাক চৌধুরী, ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন, সি প্লাস টিভির আলমগীর অপু, কাউন্সিলর সৈয়দ ফিরোজ গনী, আই অন টিভির পরিচালক আতাউল্লাহ ফারুক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত মাহমুদ টিপু ও সলিসিটর জাগির আলম প্রমুখ।
এ সময় মঞ্চে নানা পর্বের সঞ্চালনায় ছিলেন মোহাম্মদ কায়সার, মাসুদুর রহমান, শহিদুল ইসলাম সাগর, নূরুন্নবী আলী, শহিদুল ইসলাম সাগর, ডা. মিফতাহুল জান্নাত।
অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মীর রাশেদ আহমেদ, আরশাদ মালেক, আলী রেজা, রাজ্জাকুল হায়দার বাপ্পী, হাসান আনোয়ার, টিংকু চৌধুরী, অনুপম সাহা, আবু রায়হান শাকিল, আসমা আলম, ফয়সাল আনোয়ার, শেখ নাছের, ইব্রাহিম জাহান, মোরশেদ ও মোহাম্মদ ইসলাম ও ফসি উদ্দিন প্রমুখ।