চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করে ব্যাপক পরিমাণে জ্বালানি তেল ও স্বর্ণ মজুত করছে। এ পদক্ষেপ বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কেন এমন করছেন তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। শুধু তেল ও স্বর্ণ নয়, চীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণেও মনোনিবেশ করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থেকে শিক্ষা নিয়ে জিনপিং তার দেশের অর্থনীতিকে রক্ষায় এ পদক্ষেপ নিচ্ছেন। ওয়ার অন দ্য রকস ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব নেভাল ইন্টেলিজেন্সের সাবেক প্রধান মাইকেল স্টাডম্যান উল্লেখ করেছেন, চীন সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে চীন, তবে কখনোই সেখানে শাসন চালায়নি। মার্কিন কর্মকর্তাদের একাংশের ধারণা, ২০২৭ সালে চীন তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে। অন্যদিকে, অনেকেই মনে করেন চীন এমন কিছু করবে না। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীনের স্বর্ণ মজুত বৃদ্ধি নিয়ে পশ্চিমাদের মধ্যে সন্দেহ বাড়ছে।
২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ১৮ মাস ধরে পিপলস ব্যাংক অব চায়না স্বর্ণের মজুত বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেনগুই বলেছেন, চীনের বৈচিত্র্যপূর্ণ আন্তর্জাতিক রিজার্ভের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্বর্ণ মজুত। যুদ্ধের সম্ভাব্যতার প্রশ্নে তিনি বলেন, চীনের স্বর্ণ মজুত একটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি।
স্বর্ণের পাশাপাশি চীন ব্যাপক পরিমাণে জ্বালানি তেলও কিনছে। ২০২২ সালে চীন প্রতিদিন রেকর্ড ১ কোটি ১৩ লাখ ব্যারেল তেল আমদানি করেছে, যা করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির কারণ। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা মাথায় রেখে খাদ্য ও জ্বালানির মজুত বাড়াচ্ছে এবং নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। স্টাডম্যানের মতে, তাইওয়ানে হামলা চালানোর সম্ভাবনার কারণে চীন এই সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।