দেশে বর্তমানে ৭২টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। আইন ও নীতিমালা অনুসারে মানসম্পন্ন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা না করায় ৪টি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে এবং ২টি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের ২০২৪-২৫ অর্থ-বছরের বাজেট অধিবেশনে সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এ তথ্য জানান। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী।
ফরিদা ইয়াসমিনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, হাসপাতালের অবকাঠামোগত বৈদ্যুতিক লাইনের সমস্যা এবং দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল ঘাটতিতে অনেক সময় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যায় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালগুলোয় নতুন যন্ত্রপাতিও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে পারে। তবে যন্ত্রপাতিগুলো দ্রুত চালু করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সারাদেশে ১৪ হাজার ৮৯০টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ১৪ হাজার ৩২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে, ৬৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এসব ক্লিনিকে ১৪ হাজার ২৫৬ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার কর্মরত আছে। কমিউনিটি ক্লিনিক হতে গ্রামীণ জনগণকে মূলত: স্বাস্থ্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য উন্নয়ন, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগ শনাক্তকরণ, সীমিত নিরাময়মূলক সেবাসহ জরুরি ও জটিল রোগীদের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য উচ্চতর পর্যায়ে রেফার সংক্রান্ত সেবা দেওয়া হচ্ছে।
দেশে মেডিকেল কলেজ ১১০টি
বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সরকারি ও বেসরকারি মিলে দেশে মোট মেডিকেল কলেজ ১১০টি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি মেডিকেল কলেজ ৩৭টি, যার আসন সংখ্যা ৫ হাজার ৩৮০টি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত সরকারি মেডিকেল কলেজ একটি, যার আসন সংখ্যা ১২৫টি। এছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ৭২টি। এর মধ্যে সেনাবাহিনী পরিচালিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ৫টি, যার আসন সংখ্যা ২৬০টি। অপর ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন ৬ হাজার ২৯৭টি।
বেসরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবার ফি নির্ধারণের উদ্যোগ
বেসরকারি পর্যায়ে সকল রোগ নির্নয় ও স্বাস্থ্য সেবার ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। আজ সংসদ অধিবেশনে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারসমূহের রোগ নির্ণয় ফি নির্ধারণসহ তা যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এছাড়া বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মূল্যের ফি নির্ধারণের জন্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
৫ বছরে ৫ কোটি মানুষকে কলেরা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে
ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, জাতীয় কলেরা নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা ২০১৯-২০৩০ অনুযায়ী সারাদেশে ডায়রিয়া ও কলেরা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ আগামী ৫ বছরের মধ্যে ৫ কোটি মানুষকে কলেরা ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনা জিএভিআই ও জিটিএফসিসি কর্তৃক অনুমোদন পেয়েছে। সারাদেশের সকল সরকারি হাসপাতালে কলেরা শনাক্তকরণের জন্য কিট সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।